কেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া জরুরি ?

প্রকাশঃ মে ২৪, ২০২১ সময়ঃ ২:৫৬ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ২:৫৬ পূর্বাহ্ণ

মিজান বিন মজিদ:

ক. যারা শিক্ষাজীবন শেষ করে(বিএ এমএ’র ছাত্রছাত্রী) কর্মজীবী হয়ে সংসারের হাল ধরার কথা,তারা বেহাল বেকার বিবর্ণ…। তাদের রাত কাটে নির্ঘুম, দিন যায় বেঘোরে। মা-বাবার করুণ চাহনির সামনে তারা অপরাধীর মতন ভ্যাবাচেকা খায়। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের দুর্দশা এইক্ষেত্রে নির্মম, অকথ্য।
খ. যারা বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় বসতে প্রস্তুত, তাদের অনিশ্চিত জীবনের হাহাকার দুর্বিষহ।গত ব্যাচ ‘অটোপাস’ নামক তীর্যক বাক্যবাণে জর্জরিত। এসএসসি ও এইচএসসি সময়মত অনুষ্ঠান করতে না পারলে ‘অবমানের তিলক’ নতুনদেরও স্পর্শ করবে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাসান্তে বৃহত্তর শিক্ষাঙ্গনে প্রবেশের অপেক্ষা তাদের যৌবনকে বিষিয়ে তুলেছে। এই প্রজন্মের মধ্যে হতাশার বীজ বেশি গেঁড়ে বসলে একটি পঙ্গু জাতির পথ তৈরি হবে। তখন পস্তালেও ক্ষতিপূরণ সম্ভব হবে না।
গ. যারা প্লে নার্সারি শিশুশিক্ষার এইসব স্তরে আছে তারা টোটালি ‘ভোদাই’ হতে চলেছে। ইচ্ছায় অনিচ্ছায় এদের আমরা অতি বাৎসল্য দিয়ে থাকি। নিয়মিত স্কুলে না যাওয়ার খেসারত এই বাচ্চাদের ক্ষেত্রে কতটা মারাত্মক হতে পারে তা অননুমেয়। বিশেষ করে,যারা এই বয়সের বাচ্চার অভিভাবক তারা জানেন কী অজ্ঞতায় নিমজ্জিত হচ্ছে তাদের উত্তর প্রজন্ম।
ঘ. ইন্টারনেট এর ব্যবহার যথেচ্ছ চলছে। ভিডিও গেইমের নেশা,নানান রকম অ্যাপস এর কদর্যকর সাইটসমূহের সুলভতা বখে দিচ্ছে তারুণ্যকে…। আমাদের প্রজন্মের জন্যে যেটা ছিলো লুকিয়ে পাবার দুর্বার চেষ্টা, সেটা অনলাইন ক্লাস বা এই জাতীয় যুক্তিতে কিশোর কিশোরীর হাতে হাতে। আহারে নীল দরিয়া,আমায় দে রে ছাড়িয়া! সারারাত সবুজ বাত্তির নেশা,বিনিদ্র আদ্র আলাপ,খেয়ে দিচ্ছে তাদের সব সম্ভাবনা। সব বানিয়ে শব!!
ঙ. এক অভিভাবক আক্ষেপ করে বলছেন, “স্যার,আমি ক্ষমা চাই। পোলাডারে নেন, আমি আর পারি না। চব্বিশ ঘণ্টা মোবাইল ল্যাপটপ ও ট্যাব নিয়ে থাকে। ” এইগুলো যাদের আছে তাদের কেউ কেউ সরকারি বেসরকারি ভালো প্রতিষ্ঠানের কিছু সুবিধা হয়তো পেয়েছে। কিন্তু অর্জনের সঙ্গে বিসর্জন এর অনুপাত মিলিয়ে দেখলে ‘বিসর্জন তালিকা ‘ প্রলম্বিতই হতে থাকবে,সীমানাবিহীন…।
চ. শিক্ষক শিক্ষার্থী নির্বিশেষে অনভ্যাসে বিপুল বিদ্যা হ্রাস হয়েছে। গত প্রায় সোয়া একবছরে মানসিক চাপ,আর্থিক টানাপড়েন,অসুখবিসুখ আমাদের জাতীয় মানসকে বিকলাঙ্গ করে ছেড়েছে। আর বাড়তে দিলে সেটা বিবশ,অবশ ও নিঃসাড় হতে বাধ্য। গোটা জাতির ‘মেরুদণ্ড’কে নিঃস্তব্ধ করে অন্য সব অঙ্গে ‘তৈল’ মালিশ করলেও রেজাল্ট হবে অশ্বডিম্ব।
ছ. কত প্রতিষ্ঠান এর অপমৃত্যু হয়েছে পরিসংখ্যান মর্মান্তিক! আরও মৃত্যু না চাইলে পদক্ষেপ অত্যাবশ্যক।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলে প্রজন্ম বড়ো করে একটা শ্বাস নিবে,ওতেই হারিয়ে যাবে সব জড়তা..।….(প্লিজ ছড়িয়ে দিন এই বার্তা শেয়ারে শেয়ারে,আপনারই স্বার্থে!)
মিজান বিন মজিদ
সহকারী অধ্যাপক,
মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ, টাঙ্গাইল।

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

May 2024
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
20G